Header Ads

গ্যাসের ব্যাপন ও নিঃসরণ

উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন ২য় পত্র

গ্যাসের ব্যাপন (Diffusion of Gases): উচ্চ ঘনত্বের স্থান থেকে নিম্ন ঘনত্বের স্থানে কোনো কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের স্বতঃস্ফূর্ত ও সমভাবে পরিব্যপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে। অর্থাৎ দুটি অসমান ঘনত্বের গ্যাসের পরস্পরের মধ্যে মিশ্রণের পদ্ধতিকেই বলা হয় গ্যাসের ব্যাপন প্রণালি।

গ্যাসের ব্যাপন ও নিঃসরণ

উদাহরণ ১। বদ্ধ ঘরের কোন স্থানে সুগন্ধিযুক্ত বস্তু রাখলে কিছক্ষণ পরে দেখা যায় যে ঘরের সর্বত্র সুগন্ধি পাওয়া যাচ্ছে, অবশ্য লঘু হয়ে যাওয়ার কারণে তার তীব্রতা অনেক কমে যায়। এ সুগন্ধি কীভাবে এক স্থান হতে অন্যস্থানে চলে আসে? প্রকৃতপক্ষে সুগন্ধিযুক্ত বস্তুর অণুসমূহ গ্যাসীয় অবস্থায় চারিদিকে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে অর্থাৎ গ্যাসের অণুগুলোর মধ্যে ব্যাপন ঘটে এবং কিছু অণু নাকে প্রবেশ করলে যে কোন কেউ সে সুগন্ধ পায়।

উদাহরণ ২। একটি পাত্রে কিছু পানি নিয়ে তাতে পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট এর কয়েকটি দানা ছেড়ে দিলে দেখা যায় ধীরে ধীরে দানাসমূহের নিকট পানির রং বেগুনি হচ্ছে। ক্রমশ সে রং সম্পূর্ণ পানিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। পানিকে কোনরূপ নাড়াচাড়া না করা হলেও তা ঘটে। এখানে রঙিন পারম্যাঙ্গানেট আয়ন পানি অণূর মধ্যে ব্যাপন করতে থাকে।

উদাহরণ ৩। ক্লোরিন বাতাসের চেয়ে প্রায় ২.৫ গুণ ভারী হলেও একটা ঘরের মধ্যে ক্লোরিন গ্যাস পূর্ণ পাত্র খুলে দিলে এক সময় দেখা যায় সমস্ত ঘরের মধ্যে Cl2 গ্যাস সমানভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘরের প্রত্যেক অংশের বায়ু পরীক্ষা করলে দেখা যাবে সব জায়গায় বায়ু ও ক্লোরিনের অনুপাত সমান

নিঃসরণ বা অনুব্যাপন (Effusion): বাহ্যিক চাপের প্রভাবে সরু ছিদ্রপথ দিয়ে কোনো গ্যাসের সজোরে বের হয়ে আসাকে নিঃসরণ বলা হয়।

উদাহরণঃ সিলিণ্ডারের ভেতরে অ্যামোনিয়া গ্যাসকে উচ্চ চাপে রাখা হলো। এখন ঐ অ্যামোনিয়া সিলিণ্ডারে যদি কোন ক্ষুদ্র/সূক্ষ্ম ছিদ্র থাকে, তবে তা থেকে সজোরে অ্যামোনিয়া বের হয়ে আসবে। এটি হচ্ছে নিঃসরণ।

যেমনঃ ১. প্রেসার কুকারের গ্যাস বের হওয়া নিঃসরণের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

২. গাড়ির চাকার গ্যাস লিকের মাধ্যমে বের হওয়া।

ব্যাপন ও নিঃসরণের মধ্যে তুলনাঃ ব্যাপন ও নিঃসরণের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিম্নরূপঃ

সাদৃশ্যঃ (i) ব্যাপন ও নিঃসরণ উভয় প্রক্রিয়াই তরল ও গ্যাস অণুসমূহের স্থানান্তর প্রক্রিয়া।

(ii) ব্যাপন ও নিঃসরণ উভয় প্রক্রিয়ার হার পদার্থের আণবিক ভর ও ঘনত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়।

বৈসাদৃশ্যঃ (i) ব্যাপন অণুসমূহের স্বতঃস্ফূর্ত মন্থর প্রক্রিয়া কিন্তু নিঃসরণ হলো অধিক চাপের প্রভাবে অণুসমূহের দ্রুত প্রক্রিয়া।

(ii) ব্যাপন সরু বা বিস্তৃত উভয় পথেই ঘটে। কিন্তু নিঃসরণ শুধুমাত্র সরু ছিদ্রপথে ঘটে।

(iii) ব্যাপন প্রক্রিয়া একই চাপে ঘটে। কিন্তু নিঃসরণ প্রক্রিয়ায় পাত্রের ভেতরে ও বাইরে চাপ ভিন্ন থাকে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.