মহাবীর আলেকজান্ডারের মৃত্যু | Death of Alexander the Great
বিলিভ ইট অর নট
গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডার দি গ্রেট ভারত অভিযানে এসেছিলেন খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ সালে। কথিত আছে ভারত থেকে স্বদেশে ফেরার পথেই তিনি সহসা ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন এবং ব্যাবিলন নগরীতে এসে মারা যান। স্বদেশে ফেরা আর তাঁর হয়নি।
সম্রাট আলেকজান্ডারের মৃত্যুর সময়েই ঘটেছিল এক অলৌকিক ঘটনা। আলেকজান্ডার তখন ব্যাবিলনে নিজ প্রাসাদে মৃত্যুশয্যায় শায়িত। তাঁর চিকিৎসা করছেন ব্যাক্তিগত চিকিৎসক ফিলিপস। সম্রাটের অবস্থা ভালো নয় জেনেও তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। এই সময়েই সম্রাট তাঁর মৃত্যুশয্যায় শুয়ে পেলেন এক গোপন চিঠি। গুপ্তচর একটি চিরকুট এনে দিল তাঁর হাতে। তখন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজ চিকিৎসক ফিলিপস। চিকিৎসক তাঁর ওষুধের পেয়ালা হাতে তুলে দিচ্ছেন সম্রাটের। তাঁকে অনুরোধ করছেন তেতো ওষুধটুকু পান করতে।
তখন হাতে এলো গুপ্তচরের দেয়া পত্র। পত্রে লেখা ছিলঃ সম্রাটের চিকিৎসকই তাঁকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছেন, চেষ্টা করছেন সম্রাটকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করার। সম্রাট তাই যেন চিকিৎসক ফিলিপসের থেকে সাবধান থাকেন। ষড়যন্ত্রটা অবশ্য চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। ভারত থেকে ফেরার পথেই তাঁর কয়েকজন জেনারেল চেষ্টা করছিলেন মহাবীর আলেকজান্ডারের প্রাণনাশের। কিন্তু সামনা-সামনি দাঁড়িয়ে তাঁকে হত্যা করা সম্ভব নয়। এত শক্তি বা সাহস কারো নেই।
তাই গোপনে কাজ হাসিলের চেষ্টা করতে লাগলেন তারা। এই ষড়যন্ত্রকারিরাই বহু অর্থের বিনিময়ে হাত করেছিলনে রাজ চিকিৎসক ফিলিপসকে। সুযোগও এসে গেল।
ভারত থেকে ফেরার পথে ব্যাবিলনে এসে অসুস্থ হয়ে পড়লেন সম্রাট। ওরা সুযোগ খুঁজতে লাগলো, এই সময়েই চিকিৎসক ফিলিপসকে দিয়ে সম্রাটকে ওষুধের নাম করে বিষ খাওয়ানো হবে।
ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্য জানতেন না যে এই অসুখেই সম্রাটের মৃত্যু হবে। তাহলে তো কোন ষড়যন্ত্রের প্রয়োজন হত না। গোপন পত্র পেয়ে সম্রাট চমকে উঠলেন। আর তখনি ফিলিপস তাঁর হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন ওষুধের পেয়ালা। সম্রাটকে ওষুধটুকু খেতে অনুরোধ করছেন এক চুমুকেই।
সম্রাটের আর ওষুধ খাওয়া হলো না। তিনি তাকালেন চিকিৎসক ফিলিপসের মুখের দিকে। তারপর গুপ্তচরের চিঠিখানা তুলে দিলেন চিকিৎসক ফিলিপসের হাতে। ওষুধের পেয়ালাটা ছুড়ে ফেলে দিলেন দূরে। পত্র পড়ে চিকিৎসকের মুখ বিবর্ণ হয়ে গেল। সম্রাটের দেহরক্ষীরা ধরে নিয়ে গেল বিশ্বাসঘাতক ফিলিপসকে। তাকে হত্যা করা হলো।
এর পরের দিনই সম্রাট আলেকজান্ডার নিজেও মৃত্যুবরণ করলেন।
কোন মন্তব্য নেই